আমাদের সমাজে তথা সারা দুনিয়ায় ১% লোকের এই সমস্যা হয়ে থাকে। আমাদের আশেপাশে এমন অনেক মানুষ দেখা যায় যাদের এই সমস্যা রয়েছে। কথা বলতে গেলে ঠিক মত কথা বলতে পারেন না। কথা বলার সময় কথায় তোতলামোর ভাব চলে আসে বা তোতলামি শুরু হয়ে যায় কিংবা সুনির্দিষ্ট কিছু শব্দ স্পষ্ট উচ্চারণ করতে পারেন না।তোতলামির একাধিক কারণ রয়েছে। সাধারণত জেনেটিক কারণে তোতলামি সমস্যা দেখা দেয়। বাবা-মায়ের যদি তোতলামি সমস্যা থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে সন্তানেরও হতে পারে। অপরদিকে তোতলামি নিউরোজেনিক কারণেও হতে পারে। আবার এর পিছনে শারীরিক,মানসিক এবং পরিবেশগত কারনও দায়ী। তোতলামি সমস্যায় সাধারনত মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশি আক্রান্ত হয়। সাধারণত ৫ জন ছেলে শিশুর বিপরীতে ১ জন মেয়ে শিশুর তোতলামি সমস্যা হয়ে থাকে।এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় নিওরোলজিস্টরা বলেন-কথা বলতে গেলে যেসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ প্রয়োজন,যেমন-জিহ্বা,তালু,গলার পেশি ইত্যাদি ঠিকমতো বশে না থাকলে তোতলানো সমস্যা প্রকট হতে পারে। আবার মস্তিষ্কের বেশ কয়েকটি অংশ থেকে মানুষের কথা বলা নিয়ন্ত্রিত হয়। আর এসব অংশে সমস্যা থাকলেও তোতলানো সহ কথা বলা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে।ছোটবেলায় যদি কেউ মাথায় গুরুতর আঘাত পায়,তা থেকেও কথা বলার সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশুকে ছোটবেলায় যদি কথা বলার জন্য বেশি চাপ সৃষ্টি করা হয়,সেক্ষেত্রে শিশুটির মধ্যে তোতলামো ভাব আসতে পারে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রাপ্ত বয়সেও তোতলামি সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্ট্রোক এর অন্যতম কারন।তোতলামো সমস্যার চিকিৎসাঃসঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে চললে তোতলামি সম্পূর্ণ ভালো হয়। তবে চিকিৎসা দেরিতে শুরু হলেও তোতলামো কমানো সম্ভব। তোতলামির একমাত্র চিকিৎসা হলো থেরাপী। থেরাপির তিনটি ভাগ ইন্ডিভিজুয়াল থেরাপি, গ্রুপ থেরাপি এবং কাউন্সেলিং থেরাপি। প্রথম দুটি স্পিচ থেরাপির অংশ।*স্পিচ থেরাপি এমন একটা সিস্টেম যার দ্বারা রেট অব স্পিচ কমানো হয়। এর দ্বারা ব্রিদিং প্যাটার্ন ঠিক করা হয়, মাসল টেনশন কমানো হয় এবং মনোবল বাড়ানো হয়। পুরো কাজটা মিডভ্যাস পদ্ধতিতে কাজ করে।এছাড়া তোতলামি কাটানোর উপায়গুলো হলো-* নিজের তোতলামিকে ভয় না পেয়ে সমস্যাটিকে কীভাবে সামলানো যায় তা শেখা৷ এর জন্য বেশি বেশি কথা বলার চেষ্টা করা, টেলিফোনে কথা বলা, সবার সামনে বক্তব্য রাখার অভ্যাস গড়ে তোলা।* দৈনন্দিন কাজকর্মে অসুবিধাগুলো কীভাবে কাটানো যায়, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া হয়৷ যেসব শব্দ বলতে গেলে আটকে যায়, সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে অন্য শব্দ নেওয়া যেতে পারে৷* কণ্ঠস্বর নরম করে কথা বলা৷ এইভাবে কথা বললে তোতলামিটা থাকে না৷ এ জন্যে ধীরে ধীরে চেপে কথা বলার অভ্যাস গড়ে তোলা।* তোতলানোর সময় মস্তিষ্কের এক অংশ অন্য অংশের সমস্যা কাটাতে চেষ্টা করে৷ আর তাই গানের মাধ্যমেও তোতলামিকে আয়ত্তে আনা যায়৷ কেননা সংগীত ও গানের জগৎ থাকে মস্তিষ্কের ডান দিকে৷ আর বাঁ দিকে থাকে কথার এলাকা৷ এজন্য তোতলাদের গান গাইতে কোনো অসুবিধা হয় না৷ এভাবে নিয়মিত গানের চর্চা করলেও এক সময় তোতলামো সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়।* সন্তানের তোতলামোর উপসর্গ দেখা দিলে আগে বাবা-মা বুঝতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তখনই নিজেদের দ্বারা কাউন্সেলিং করা প্রয়োজন। ছোটবেলা থেকে যদি নজর না দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় কোন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যে কোন মানসিক চাপ তোতলামি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই বাবা-মাকে সব সময় এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত এবং একজন অভিজ্ঞ স্পীচ থেরাপিস্টের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।তোতলামো সমস্যার চিকিৎসা সহ স্পীচ ও হিয়ারিং সম্পর্কিত সকল ধরনের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে আপনাদের পাশে আছি আমরা “Shono Bangladesh Hearing and Speech Point” পরিবার।ঠিকানাঃ ৬৫/ক মাটিকাটা -ইসিবি চত্ত্বর রোড। বায়তুন নুর জামে মসজিদের উত্তর পাশে।ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ঢাকা ১২০৬মোবাইলঃ ০১৭৭৪-৯১০৭৯১,০১৪০৬-৩০৩০৯০